
সিএসই বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বের মাঝে জনপ্রিয় একটি সাবজেক্ট। দিন দিন CSE এর চাহিদা ক্রমশই বাড়োছে। আই আজকে আমরা সিএসই সাবজেক্ট রিভিউ (CSE Subject Review) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সকল সাবজেক্টের রিভিউ পেতে এখানে ক্লিক কর।
কম্পিউটার সাইন্স বা সিএসই/CSE একটি উচ্চ লেভেলের সাবজেক্ট। প্রতিবছর বহু ছাত্র-ছাত্রী এই সাবজেক্টে ভর্তি হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সঠিক গাইডলাইন এর অভাবে তারা কম্পিউটার সাইন্সে ভালো করতে পারে না। তাই আমি এই পোষ্টে চেষ্টা করব কম্পিউটার সাইন্স সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে। কম্পিউটার সাইন্সের ভবিষ্যৎ, এখানে কি কি পড়ানো হয় সহ একজন শিক্ষার্থীর কিভাবে পড়ালেখা করা উচিত সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো। সুতরাং আজ আমদের রিভিউ এর বিষয়, সিএসই সাবজেক্ট রিভিউ।
কেন পড়ব সিএসই
CSE পড়লে একজন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা, ক্যারিয়ার গঠন এসব বিষয়ে প্রচুর সুবিধা পাবে। তাছাড়া, কম্পিউটার বিজ্ঞান একজন শিক্ষার্থীর সামনে অনেক ধরনের রাস্তা খুলে দেয়। কেউ যদি চাকরি করতে চায়, সেই সুযোগ আছে এবং বাড়ছে। কেউ যদি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে চায়, উদ্যোক্তা হতে চায়, তা-ও সে করতে পারে। আবার কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণারও সুযোগ আছে অনেক। বাংলাদেশ থেকে যেসব শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য যায়, তাদের একটা বড় অংশই কিন্তু কম্পিউটার বিজ্ঞানের স্নাতক। প্রতিদিন কম্পিউটার আগের চেয়েও উন্নত হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে আরও নতুন নতুন কাজের সুযোগ। আইটি আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম ৩০টি সম্ভাবনাময় দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের দেশে এখনো চাহিদার তুলনায় দক্ষ কম্পিউটার সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট অনেক কম। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। সাথে সাথে শিল্পে আধুনিকায়ন হচ্ছে। পরমাণু শক্তি কমিশন, Satellite Transmission থেকে Traffic Controlling, E-governance, রেল যোগাযোগ সহ সকল ক্ষেত্রেই কম্পিউটার এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ফলে সকল ক্ষেত্রেই CSE এর চাহিদা ব্যাপক।
ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে কয়েকগুন। ইন্ডাস্ট্রিগুলো সবই সয়ংক্রিয় হয়ে যাবে। নতুন নতুন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র তৈরি হবে। মানুষ সব কিছুই এখন ঘরে বসে পেতে চায়। ফলে অনলাইন মাধ্যমগুলো দিন দিন জনপ্রিয় বাড়বে। আরো অনেক ধরনের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট তৈরি হবে। নতুন নতুন সফটয়্যার ও গেমসের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। যে বিষয় গুলো এখন পর্যন্ত এনালগে হচ্ছে সেগুলোতেও কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়বে। ফলে আগামী দিন যে সৃজনশীলতা আর উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা নিজেদের দখলে নিয়ে নেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মেকাট্রনিক্স আর রোবটিক্সের মত আরো বিভিন্ন শাখা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক।
CSE তে উচ্চশিক্ষার সুযোগ
- ১. সরকারী বিভিন্ন বিভাগ যেমন বিদ্যুৎ উন্নয়ন অধিদপ্তর, পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর সহ প্রায় সবজায়গায় প্রকৌশলী হিসেবে চাকুরি করতে পারবে।
- ২. Software Engineer, Programmer, IT expert হিসেবে বিভিন্ন ফার্মে চাকুরি করতে পারবে।
- ৩. Network Management, System Analyst হিসেবে চাকুরির সুযোগ রযেছে।
- ৪. Web Design & Developer হিসেবে চাকুরির সুযোগ রযেছে।
- ৫. Graphics Designer হিসেবে বিভিন্ন ফার্মে চাকুরি করতে পারবে।
- ৬. Film Industry
- ৭. সামরিক বাহিনীতে প্রচুর IT expert প্রয়োজন।
- ৮. শিক্ষকতা।
- ৯. শিল্পকারখানায় প্রসেস কন্ট্রোলিং।
- ১০. মোবাইল কোম্পানি।
- ১১. Microsoft, Google, Yahoo, Facebook, Intel এগুলো তো আছেই।
- ১২. NASA বাদ যাবে কেন!
- ১৩. এছাড়া আইটি ফার্ম দিলে সমস্যা কোথায়!
- ১৪. ফ্রিল্যান্সিং করা যেতে পারে।
- ১৫. প্রয়োজনমত অ্যাপ, গেম, ওয়েব বানিয়ে ফেলতে পারো।
- ১৬. প্রোগ্রামিং শিখে তুমি বানিয়ে ফেলতে পারো তোমার শখের রোবট। তারপর গুগল, মাইক্রোসফটে জব পেয়ে যেতে পারো।
- ১৭. Android Developer
- ১৮. নেটওয়ার্কিং।
এছাড়া তুমি যদি কম্পিউটার সাইন্সে দক্ষ হও তাহলে তুমি নিজেই একটি আইটি ফার্ম দিতে পারবে এবং শুধু নিজের কর্মসংস্থান নয় বরং অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারবে। কিন্তু একটি কথা থেকেই যায় সেটি হচ্ছে তোমাকে দক্ষ হতে হবে।
কম্পিউটার সাইন্সে স্কলারশীপ
Massachusetts Institute of Technology (MIT), Harvard University, The University of Melbourne, University of California at Berkeley (UCB), University of Cambridge, University of Oxford, University of Toronto, The University of Queensland, Princeton University, Monash University এর মত বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়া যায়। স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়াশোনা করার সুযোগ অন্যান্য বিভিন্ন সাব্জেক্টের তুলনায় CSE তে অনেক বেশী।
এছাড়াও প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার সায়েন্স সাবজেক্ট রয়েছে। তাই তুমি যে কোন দেশে স্কলারশিপ পেতে পারো। একথা নিশ্চিত হবে বলা যায়, ভবিষ্যৎ পৃথিবী হবে টেকনোলজি এবং বিজ্ঞানভিত্তিক। সুতরাং কম্পিউটার এর জনপ্রিয়তা কমার কোনো সুযোগ নেই। তাই উন্নত দেশগুলোতে খুব সহজেই এ বিষয়ে স্কলারশিপ পাওয়া যায় এবং প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর স্টুডেন্ট বাইরে এ বিষয়ে ডিগ্রী নিতে যায়।